বগুড়ার শেরপুরে ধান কেটে মজুরি না পাওয়ায় পাঁচ দিনমজুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। সোমবার (১৯ মে) উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের সরকারপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে বলে জানিয়েছে।
অভিযোগকারী শ্রমিক আব্দুল হান্নান (৫৭) শেরপুর উপজেলার কুসুম্বী ইউনিয়নের বাগড়া গ্রামের মৃত মোজাম্মেল হকের ছেলে।
তিনি জানান, প্রতিদিনের মতো কাস্তে ও বাঁশের তৈরি ‘বাইন’ কাঁধে করে সোমবার সকালে শেরপুর শহরের নবীবালা ঘাটপাড় সংলগ্ন ‘শ্রমিক হাটে’ কাজের সন্ধানে যান। সেখান থেকে মির্জাপুরের রাজেক আলীর ছেলে আব্দুল কুদ্দুস তাঁদের পাঁচজনকে প্রতিজন ৭০০ টাকা মজুরি দেওয়ার শর্তে দেড় বিঘা জমির ধান কাটার কাজে নিয়ে যান।
দিনভর খেটে ধান কেটে মালিকের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার পর কুদ্দুস কাজের মান খারাপ হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে শ্রমিকদের গালাগালি করেন এবং মজুরি না দিয়ে হুমকি দিয়ে বিতাড়িত করেন।
আব্দুল হান্নান আরও বলেন, ‘কাজ করেও টাকা না পেয়ে আমরা দিশাহারা হয়ে পড়ি। উপায় না দেখে রাতেই থানায় লিখিত অভিযোগ করি।’
তার সঙ্গে থানায় অভিযোগ করা অন্য শ্রমিকরা হলেন- মির্জাপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর নামাপাড়া গ্রামের মৃত মনসুর মণ্ডলের ছেলে হাফিজুর রহমান, মৃত সাহেব আলী প্রামাণিকের ছেলে আশরাফ আলী, মোহাম্মদ বেলাল হোসেনের ছেলে রিপন ও আবির হোসেন আকন্দের ছেলে হুমায়ুন কবির।
শ্রমিকরা জানান, প্রতিদিন সকালে ‘শ্রমিক হাটে’ গিয়ে কাজ খোঁজেন তারা। দিনমজুরির আয়ই তাদের একমাত্র অবলম্বন। কোনো দিন কাজ না পেলে পরিবার নিয়ে অনাহারে থাকতে হয়। আর কাজ করেও যদি মজুরি না মেলে, তাহলে সেই কষ্টের কি মূল্য থাকে?
এ বিষয়ে অভিযুক্ত জমির মালিক আব্দুল কুদ্দুসের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, ‘শ্রমিকদের অভিযোগ আমরা পেয়েছি। বিষয়টি মানবিক বিবেচনায় গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। স্থানীয়দের মতে, দিনমজুরদের রোজগার না হওয়াটা শুধুই ব্যক্তিগত ক্ষতি নয়, এটি একটি সামাজিক বিষয়। এমন ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে ভবিষ্যতে কেউ গরিব মানুষের শ্রমের মূল্য মেরে খেতে সাহস পাবে না।
মন্তব্য করুন