কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলা ঝলম গ্রাম ও হাওরা গ্রামের মধ্যবর্তী স্থানে ডাকাতিয়া নদীর উপর নির্মিত ‘হাওরা সেতু’ জনগণের কোনো কাজেই আসছে না। সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় গত ১৭ বছর ধরে সেতুটি মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। এতে ডাকাতিয়া নদীর দুই পাড়ের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, কৃষক, ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লক্ষাধিক মানুষ সীমাহীন ভোগান্তি পোহাচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালের ৫ জানুয়ারি বিএনপি দলীয় তৎকালীন সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম ওই সেতুর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। ২০০৫-২০০৬ অর্থবছরে এলজিইডির তত্ত্বাবধানে ও ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি) অর্থায়নে ৮০ লাখ টাকায় ওই সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল। ২০০৬ সালের ৩০ এপ্রিল নির্মাণ কাজ শেষ হয় এবং একই দিন উদ্বোধন করা হয়। কিন্তু সংযোগ সড়ক না করেই উদ্বোধন করায় তখন থেকেই অব্যবহৃত পড়ে আছে। এটি জনগণের কোনো কাজেই লাগছে না।
স্থানীয়রা জানান, সেতুর উভয় পাশে সংযোগ সড়ক না থাকায় স্থানীয় লোকজনকে বছরের পর বছর ধরে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ওই সেতুর স্থানে আগে বাঁশের সাঁকো ছিল। হেঁটে ওই সাঁকো দিয়ে দ্রুত পার হওয়া যেতো। উঁচু সেতু নির্মাণ হওয়ায় এবং এর দুই দিকে মাটি না থাকায় শুকনো মৌসুমে সেতুতে উঠতে বেশ কষ্ট হয় এবং বেশি সময় লাগে। এ ছাড়া বর্ষাকালে সেতুটির সকল যোগাযোগ মাধ্যম পানিতে তলিয়ে যায়। ওই সময় সাধারণ মানুষ পায়ে হেঁটে যাওয়ার সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হয়। এতে বাধ্য হয়ে এলাকার মানুষকে নৌকাযোগে নদী পারাপার হতে হয়।
হাওরা গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা হাওরা এতিমখানা মাদ্রাসার শিক্ষক মোহাম্মদ সানাউল্লা বলেন, এ ব্রিজটি সাথে উভয়ই পাশে সংযুক্ত ভালো রাস্তা না থাকায় চলাচলের অনুপযোগীর কারণে নির্মাণের ১৭ বছর পর, ব্রিজে এখন ছাগল পালনের খামার হয়েছে। মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘মানুষের চলাচল না থাকায় আমি ব্রিজের ওপর ছাগল পালন করি।’
বাইশগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান মো আলমগীর হোসেন (বিএসসি) জানান, রাস্তাটি দীর্ঘদিন থেকে চলাচলের উপযোগী ছিল। বিষয়টি এলজিআরডিমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপির দৃষ্টিগোচর হলে তিনি মনোহরগঞ্জ এলজিআরডিকে বলে বরাদ্দের মধ্যামে টেন্ডার দেন। ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে কাজ বিলম্বিত হচ্ছে।
উপজেলা প্রকৌশলী মো শাহ আলম জানান, হাওরা ব্রিজের উভয় পাশে ভালো সংযোগ সড়ক না থাকায় এটি ব্যবহারের অনপযোগী। বর্তমানে মাননীয় এলজিআরডিমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপির প্রচেষ্টায় সড়কটি অনুমোদন হয়েছে। আশা করি খুব শিগগিরই নির্মাণে কাজ শুরু হবে। মানুষের দুর্ভোগ নিরসন হবে।
মন্তব্য করুন