পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সর্বোৎকৃষ্ঠ পন্থা বৃক্ষরোপণ। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব মোকাবিলা ও পরিবেশের সৌন্দর্যবর্ধনে বৃক্ষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মানবজাতিসহ প্রাণিকূলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য নির্মল প্রাকৃতিক পরিবেশ গড়ে তুলতে পরিকল্পিতভাবে পর্যাপ্ত গাছ লাগান একান্ত প্রয়োজন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গাছ লাগিয়ে পরিবেশের সুরক্ষার পাশাপাশি বছরজুড়ে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ চলমান থাকে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কম বয়স্ক একটি গাছ বছরে প্রায় ৫ হাজার ৯০০ গ্রাম কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করতে পারে। অন্যদিকে, ১০ বছরের বেশি পুরোনো গাছ বছরে ২২ হাজার গ্রাম কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে থাকে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গত কয়েক মাসে নতুন করে দুই সহস্রাধিক গাছ রোপণ করা হয়েছে। যা বছরে প্রায় ১১ হাজার ৮০০ কেজি কার্বন-ডাই-অক্সাইড শোষণ করতে পারবে।
আগামী ১০ বছর পর এ গাছগুলো বছরে প্রায় ৪৪ হাজার কেজি কার্বন-ডাই-অক্সাইড শোষণ করতে পারবে।
এমন অভিনব উদ্যোগে একদিকে যেমন ক্যাম্পাসের পরিবেশ সুরক্ষিত থাকছে, অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার এবং আগত অতিথিরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন।
ক্যাম্পাসের খানজাহান আলী হলের দক্ষিণ ও উত্তরে রাস্তার পাশে, ক্যাফেটেরিয়ার পাশে, নির্মাণাধীন জয়বাংলা ভবন থেকে ৩নং একাডেমিক ভবন পর্যন্ত রাস্তা, অদম্য বাংলার পেছনের রাস্তা, কেন্দ্রীয় মসজিদ ও খান বাহাদুর আহছানউল্লাহ হলের মাঝামাঝি নিচু স্থানে বিভিন্ন গাছ রোপণ করা হয়েছে। এ ছাড়া আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের পাশে, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল ও অপরাজিতা হলের মাঝামাঝি স্থানে, কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের পাশে ও কেন্দ্রীয় মন্দিরসহ বিভিন্ন স্থানে কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, পলাশ, সোনালু, জারুল, হিজল ও বরুণসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ, বনজ, ঔষধি ও সৌন্দর্যবর্ধক বৃক্ষের চারাও লাগানো হয়েছে।
ইংরেজি ডিসিপ্লিনের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. সাইফুল্লাহ খালিদ জানান, ‘পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষের গুরুত্ব অপরিসীম। বৃক্ষ আমাদের বন্ধুর মতো কাজ করে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব মোকাবিলা ও ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যবর্ধনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এসব গাছ।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘কার্বন নিঃসরণ, বৈশ্বিক উষ্ণতা কমানো এবং প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষরোপণের অবদান গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া বাংলাদেশ সরকার মাতৃভূমি সবুজায়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন সময় বৃক্ষরোপণের নানা ধরনের কর্মসূচি ঘোষণা করে থাকে। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার একটি হাতিয়ারও বৃক্ষরোপণ। নির্মল প্রাকৃতিক পরিবেশ গড়ে তুলতে বেশি করে ফলজ, বনজ ও ঔষধি গাছ রোপণ করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
মন্তব্য করুন