সাবেক পাকিস্তানি ক্রিকেটার শোয়েব মালিক আবারও বিতর্কের মুখে পড়েছেন। শোয়েবের সাবেক সতীর্থ বাসিত আলী তার বিরুদ্ধে ফিক্সিংয়ের অভিযোগ তুলেছেন, যা মালিকের দীর্ঘ বিতর্কিত ক্যারিয়ারে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
পাকিস্তানের নতুন টুর্নামেন্ট চ্যাম্পিয়নস কাপ চলাকালে, যেখানে শোয়েব মালিক স্ট্যালিয়ন দলের মেন্টরের দায়িত্ব পালন করছেন, বাসিত আলী প্রকাশ্যে মালিকের নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ‘যে খেলোয়াড় স্বীকার করে যে সে ইচ্ছাকৃতভাবে ম্যাচ হেরেছে, তাকে মেন্টর করা উচিত নয়,’ বাসিত বলেন। যদিও নির্দিষ্ট ম্যাচের কথা উল্লেখ করেননি, তিনি দাবি করেন যে, তার কাছে অভিযোগ প্রমাণের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য রয়েছে।
১২ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া পাকিস্তান চ্যাম্পিয়নস কাপে পাঁচটি দল অংশ নিয়েছে, যেখানে মিসবাহ-উল-হক, সাকলাইন মুশতাক, সরফরাজ আহমেদ, ওয়াকার ইউনুসের মতো কিংবদন্তি খেলোয়াড়রা মেন্টরের ভূমিকা পালন করছেন। বাসিত, যিনি ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন, জোর দিয়ে বলেন যে, মালিকের বিতর্কিত অতীত তাকে তরুণ প্রজন্মের জন্য মেন্টর হিসেবে অযোগ্য করে তুলেছে।
উল্লেখ্য, বাসিত আলী নিজেও ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগের সম্মুখীন হয়েছিলেন, যা তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের আকস্মিক সমাপ্তির কারণ হিসেবে ধরা হয়।
বাসিতের অভিযোগে নির্দিষ্ট ম্যাচ সম্পর্কে স্পষ্টতা না থাকলেও, শোয়েব মালিকের ফিক্সিংয়ের ঘটনা ২০০৫ সাল থেকে শুরু হয়। মালিক স্বীকার করেছিলেন যে, একটি ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি ম্যাচে তিনি তার দল সিয়ালকোট স্ট্যালিয়নসকে ইচ্ছাকৃতভাবে হারিয়েছিলেন। সেই ম্যাচের ফলাফলে লাহোর ঈগলসের টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিশ্চিত হতে পারত। ভিডিও প্রমাণের ভিত্তিতে মালিককে এক ম্যাচ নিষিদ্ধ করা হয়, যার ফলে তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বার্বাডোসে প্রথম টেস্ট মিস করেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) মালিককে তাদের আচরণবিধির অধীনে শাস্তি দেয় এবং তাকে ওয়েস্ট ইন্ডিজে দুটি ওয়ানডে ম্যাচের ম্যাচ ফির ৭৫% জরিমানা করা হয়।
২০১০ সালে মালিক আবারও বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন, যখন তাকে টিম থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল অপ্রকাশিত আয়ের কারণে। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) সততা কমিটি তদন্ত শুরু করে যখন মালিক ব্যাখ্যা করতে ব্যর্থ হন যে তার বিদেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে থাকা প্রায় ৯০,০০০ ইউরোর উৎস কী। এ ঘটনার কারণে তিনি ২০১১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলতে পারেননি এবং আগস্ট ২০১১-এ একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্তের পর তাকে পুনরায় দলে ফিরিয়ে আনা হয়।
একই সময়ে, মালিককে এক বছরের জন্য দলের বাইরে রাখা হয়েছিল দলের মধ্যে নেতিবাচক পরিবেশ সৃষ্টির অভিযোগে, যা তৎকালীন অধিনায়ক ইউনিস খানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের কারণ হয়েছিল।
২০২৪ সালে শোয়েব মালিক আবারও বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন, যখন তার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) দল ফর্চুন বরিশাল তার চুক্তি বাতিল করে দেয়। খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে একটি ম্যাচে মালিক এক ওভারে তিনটি নো-বল করেন, যা ম্যাচ ফিক্সিংয়ের সন্দেহ তৈরি করে।
বাসিত আলীর সাম্প্রতিক অভিযোগের পর, শোয়েব মালিকের ক্যারিয়ার, যা ইতিমধ্যে অনেক বিতর্কে মোড়ানো, নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
মন্তব্য করুন