

রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথম ওয়ানডের পর মাঠের ভেতর নয়, এবার ঝড় বইছে মাঠের বাইরে। পাকিস্তান সফরে থাকা শ্রীলঙ্কা জাতীয় ক্রিকেট দলের বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় নাকি সিরিজের মাঝপথেই দেশে ফিরতে চান—এমনই বিস্ফোরক তথ্য জানিয়েছেন দলের ম্যানেজার মাহিন্দা হালাঙ্গোদা।
তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ চলছে, এরপর নির্ধারিত রয়েছে একটি ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট। কিন্তু নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বেড়ে যাওয়ায় সফরের ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত।
সূত্র বলছে, দলের কয়েকজন তারকা ক্রিকেটার নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আস্থা রাখতে পারছেন না। পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে আদালতের সামনে ভয়াবহ বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার পর থেকেই আতঙ্ক আরও বাড়ে শ্রীলঙ্কা শিবিরে। ঠিক এই সময়েই শোনা যায়, ‘দেশ ছাড়তে চান কয়েকজন খেলোয়াড়’—এমন খবর।
এই সংকটময় পরিস্থিতি মোকাবেলায় জরুরি তৎপরতা শুরু করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। বোর্ড চেয়ারম্যান ও একই সঙ্গে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি নিজেই আজ শ্রীলঙ্কা দলের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন, খেলোয়াড়দের উদ্বেগ দূর করতে এবং নিরাপত্তা বিষয়ে আশ্বস্ত করতে।
এর আগে ইসলামাবাদে শ্রীলঙ্কার হাইকমিশনার রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) ফ্রেড সিরিওয়ারার সঙ্গে নাকভির বৈঠকে নিরাপত্তা নিয়ে বিস্তারিত ব্রিফিং দেওয়া হয়। ইসলামাবাদের পুলিশ প্রধান ও প্রধান কমিশনার উপস্থিত ছিলেন সেই বৈঠকে।
পিসিবির এক বিবৃতিতে বলা হয়,
‘শ্রীলঙ্কা দলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তারা পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় অতিথি, তাই তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।’
শ্রীলঙ্কান হাইকমিশনারও পাকিস্তান সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন,
‘সম্প্রতি ইসলামাবাদে সন্ত্রাসী হামলায় যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের প্রতি আমরা গভীর শোক প্রকাশ করছি। একই সঙ্গে পাকিস্তান সরকারের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আমরা সন্তুষ্ট।’
তবে বাস্তবতা হলো—দলের ভেতরকার অস্থিরতা এখনো কাটেনি। সফরের দ্বিতীয় ওয়ানডে ঘিরে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। পাকিস্তান ১-০ তে এগিয়ে থাকলেও, যদি শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড খেলোয়াড়দের পক্ষ নেয়, তাহলে সিরিজ স্থগিতও হতে পারে।
২০০৯ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কা দলের ওপর সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরানো সহজ ছিল না। আর এখন ১৬ বছর পর আবারও যদি নিরাপত্তা আশঙ্কায় সফর ভেঙে যায়, তবে সেটি হবে পাকিস্তানের জন্য এক বড় আঘাত—বিশেষত যখন তারা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পূর্ণ প্রত্যাবর্তনের লড়াইয়ে আছে।
মন্তব্য করুন