বারবার বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ক্ষমতায় টিকে থাকতে হেন কাজ নেই, তিনি করেননি। তবে এবার তার থলের বিড়াল বেরিয়ে আসার উপক্রম হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ফাঁস করা গোপন তথ্য বলছে, মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন নেতানিয়াহু।
গত ১২ বছরে অন্তত দুবার ওই দেশ থেকে নেতানিয়াহুর কাছে টাকা পৌঁছেছে। গাজা যুদ্ধে উল্লেখযোগ্য সাফল্যের দেখা পায়নি ইসরায়েল। এরই মধ্যে চাঞ্চল্যকর কিছু নথি প্রকাশ করেছে মিডল ইস্ট মিডয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট-মেমরি। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এই সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ইসরায়েলের সাবেক একজন গোয়েন্দা।
মেমরি বলছে, অন্তত দুবার কাতারের কাছ থেকে নেতানিয়াহুর টাকা নেওয়ার তথ্য পেয়েছে তারা। রেভেন প্রজেক্টের আওতায় এসব নথি ফাঁস করা হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে জেরুজালেম পোস্ট।
বিশ্বজুড়ে রাজনৈতিক ও সামরিক নেতাদের সঙ্গে কাতার কীভাবে আর্থিকভাবে সম্পৃক্ত সেটি খুঁজে বের করতেই এই রেভেন প্রজেক্ট হাতে নেওয়া হয়েছিল। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, কাতারের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিবেশী সংযুক্ত আরব আমিরাতের হয়ে কাজ করা এনএসএর সাবেক একজন এজেন্টের ফাঁস করা নথির সূত্র ধরেই এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে।
ফাঁস হওয়া নথিতে ২০১২ সালের ‘টপ সিক্রেট’ চিঠিও রয়েছে। কাতারের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ হামাদ বিন জসিম আল থানি দেশটির সে সময়ের অর্থমন্ত্রী ইউসুফ হুসেইন কামালকে এই চিঠি লিখেছিলেন। চিঠিতে তিনি নেতানিয়াহুকে ৫ কোটি ডলার দিতে কামালকে কাতারের আমির শেখ হামাদ বিন খলিফা আল থানির সিদ্ধান্তের কথা জানান। একই বছর কামাল আরেকটি চিঠিতে জানান, ওই টাকা নেতানিয়াহুকে নগদ দেওয়া হয়েছে।
ওয়ার্ল্ড ভিশন অরগানাইজেশনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে নেতানিয়াহুর ব্যাংকে টাকা ট্রান্সফারের চেষ্টা চালিয়েছিল কাতার। তবে সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়। জর্ডানের সিরিজ নথি অনুযায়ী, আম্মানে এইচএসবিসি ব্যাংককে ওই তহবিল ট্রান্সফার না করার নির্দেশ দিয়েছিল জর্ডানের কর্তৃপক্ষ। তাদের যুক্তি ছিল, সন্দেহভাজন সংগঠনকে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই ওই টাকা ট্রান্সফার করা হচ্ছিল। পরে জর্ডানের ওই নথি প্রকাশেরও ঘোষণা দিয়েছে মেমরি।
প্রকাশিত নথির তথ্য অনুযায়ী, নেতানিয়াহু ও আভিগডর লিবারমেনের নির্বাচনী প্রচারণার জন্য কোটি কোিট টাকা দিয়েছে কাতার। মেমরির প্রেসিডেন্ট ও প্রতিষ্ঠাতা ইয়াগাল কারমন বলেছেন, ইসরায়েল ও পশ্চিমাদের শত্রু কাতারের ওপর গবেষণা চালিয়ে এমন তথ্য পেয়েছি আমরা। মেমরির ফাঁস হওয়া নথি অনুযায়ী, কাতারকে অর্থ দিয়েছে ইসরায়েলেও। তবে এতসব নথি প্রকাশের পরও মেমরি বলছে, নেতানিয়াহু যে টাকা নিয়েছেন, এটা প্রমাণিত নয়।
মন্তব্য করুন