তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় তিন বছরের সাজা স্থগিত হলেও সাইফার বা গোপন তারবার্তার মামলায় বর্তমানে কারাগারে আছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআইপ্রধান ইমরান খান। এরই মধ্যে নতুন করে তার বিরুদ্ধে আরেকটি অভিযোগ আনা হয়েছে। সেনা স্থাপনায় হামলায় মদদ ও জনগণকে উসকানি দেওয়ার ওই অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড হতে পারে বলে জানিয়েছেন পাঞ্জাব পুলিশের এক সিনিয়র কর্মকর্তা। খবর পিটিআই।
চলতি বছরের ৯ মে এক আল-কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ইমরান খানকে আধা-সামরিক বাহিনী রেঞ্জার্স গ্রেপ্তার করলে পাকিস্তানজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সরকারবিরোধী এই বিক্ষোভ থেকে দেশটির রাওয়ালপিন্ডির সেনা সদর দপ্তরসহ বেশ কয়েকটি সামরিক স্থাপনা, সরকারি ভবনে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া পুলিশ ও অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থার শতাধিক গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়।
৯ মের সহিংসতার সময় লাহোর কর্পস কমান্ডার হাউস ও আসকারি টাওয়ারে হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইমরান খান ও তার দল পিটিআইয়ের শত শত নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে লাহোর পুলিশের সিনিয়র তদন্ত কর্মকর্তা আনুশ মাসুদ বলেন, গত ৯ মে সেনা ও সরকারি ভবনে হামলা চালাতে উসকানি দেওয়ায় ইমরান ও তার শত শত সমর্থকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশ এ ঘটনায় পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে দেখতে পেয়েছে পিটিআইপ্রধান সামরিক স্থাপনায় হামলায় মদদ এবং সহিংসতা জন্য জনগণকে উসকানি দিয়েছেন। ১২০ (বি) ধারা ছাড়াও ইমরান ও অন্যদের বিরুদ্ধে আরও ৯টি অভিযোগ আনা হয়েছে।
ইসলামাবাদের জেলা বিচারিক আদালত গত ৫ আগস্ট তোশাখানা মামলায় ইমরানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার পর থেকে অ্যাটোক কারাগারেই আছেন ইমরান। গত মঙ্গলবার ইসলামাবাদ হাইকোর্ট (এএইচসি) এই সাজা স্থগিত করেন। কিন্তু অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের অধীনে রিমান্ডে থাকায় তিনি কারাগার থেকে বের হতে পারছেন না।
অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে ইমরানের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এফআইএ) যে অভিযোগ দায়ের করেছে, তাতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতের পাঠানো একটি গোপনীয় বার্তার বিষয়বস্তু তিনি জনসমক্ষে ফাঁস করে দিয়েছেন। এ ছাড়া এটিকে তিনি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য ব্যবহার করেছেন।
সাইফার মামলা একটি কূটনৈতিক বার্তা সম্পর্কিত, যা ইমরানের কাছ থেকে হারিয়ে গেছে বলে জানা যায়। পিটিআই অভিযোগ করে বলেছে, হারিয়ে যাওয়া এই বার্তাটিতে যুক্তরাষ্ট্র ইমরানকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল। এই মামলায় পিটিআইর ভাইস চেয়ারম্যান ও পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশিকেও গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন