কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৫ মে ২০২৫, ০৬:১৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বিশ্বে ১৮৬ দেশের মধ্যে একমাত্র খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ গায়ানা

গায়ানার কৃষি বাজার ও ক্ষেত। ছবি : সংগৃহীত
গায়ানার কৃষি বাজার ও ক্ষেত। ছবি : সংগৃহীত

গ্লোবালাইজেশনের এই যুগে বিশ্বের প্রতিটি দেশই কোনো না কোনোভাবে অন্য দেশগুলোর ওপর নির্ভরশীল। এমনকি প্রত্যেকটা দেশ তার জনগণের খাদ্য চাহিদা পূরণেও অন্যান্য দেশের ওপর নির্ভর করে থাকে। তবে এখানে সবাইকে চমৎকৃত করেছে দক্ষিণ আমেরিকার ছোট্ট দেশ গায়ানা।

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে যে, বিশ্বের ১৮৬টি দেশের মধ্যে একমাত্র খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ হলো গায়ানা।

গবেষণায় বলা হয়েছে, গায়ানা এমন একটি দেশ যেখানে ফলমূল, সবজি, মাছ, মাংস, দুগ্ধজাত পণ্য, উদ্ভিজ্জ প্রোটিন এবং শর্করার উৎস- এই সাতটি প্রধান খাদ্য উপাদানেই দেশের নিজস্ব উৎপাদনের মাধ্যমে জনসাধারণের চাহিদা পূরণ সম্ভব হচ্ছে। এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে ‘নেচার ফুড’ জার্নালে।

উর্বর মাটি, পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত এবং অনুকূল জলবায়ুর কারণে গায়ানায় কৃষিকাজ অত্যন্ত সহজ ও ফলপ্রসূ। দেশটির প্রায় ৮ লাখ জনসংখ্যা এবং বিস্তীর্ণ কৃষিজমি দেশটিকে খাদ্য উৎপাদনে বিশেষ সুবিধাজনক অবস্থানে রেখেছে। গবেষকদের মতে, গায়ানার কৃষি খাত বহুদিন ধরেই স্থানীয় চাহিদার উপর ভিত্তি করে পরিচালিত হচ্ছে, যার ফলে সাতটি প্রধান খাদ্য উপাদানেই তারা স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পেরেছে।

গবেষণাটি যৌথভাবে পরিচালনা করেছেন জার্মানির গটিনজেন বিশ্ববিদ্যালয় এবং যুক্তরাজ্যের এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। তারা প্রতিটি দেশের খাদ্য উৎপাদনের পরিমাণ এবং নাগরিকদের পুষ্টির চাহিদা বিশ্ব প্রকৃতি তহবিলের ‘লাইভওয়েল ডায়েট’ অনুযায়ী মূল্যায়ন করেছেন।

গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্বব্যাপী ৬৫ শতাংশ দেশ মাংস ও দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদনে এগিয়ে থাকলেও পুষ্টিকর উদ্ভিজ্জ খাদ্য উপাদানে রয়েছে বড় ঘাটতি। মাত্র ২৪ শতাংশ দেশ পর্যাপ্ত সবজি উৎপাদনে সক্ষম এবং উদ্ভিজ্জ প্রোটিন ও শর্করার উৎস উৎপাদনে সফল দেশের সংখ্যা আরও কম।

গায়ানার পর সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছে চীন ও ভিয়েতনাম, যারা সাতটির মধ্যে ছয়টি উপাদানে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। তবে সামগ্রিকভাবে দেখা যায়, প্রতি সাতটি দেশের মধ্যে মাত্র একটি দেশই পাঁচটির বেশি উপাদানে স্বয়ংসম্পূর্ণ।

অন্যদিকে, ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার কিছু দেশ খাদ্যে তুলনামূলকভাবে ভালো অবস্থানে থাকলেও ছোট দ্বীপরাষ্ট্র, আরব উপসাগরীয় দেশগুলো এবং নিম্ন-আয়ের অনেক দেশ এখনো ব্যাপকভাবে খাদ্য আমদানির উপর নির্ভরশীল।

গবেষণায় সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা দেশগুলোর তালিকায় রয়েছে আফগানিস্তান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরাক, ম্যাকাও, কাতার ও ইয়েমেন- যাদের কোনো একটি খাদ্য উপাদানেও স্বয়ংসম্পূর্ণতা নেই।

গবেষণার প্রধান লেখক ড. জোনাস স্টেহল বলেন, “খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা না থাকলেই যে তা নেতিবাচক কিছু, তা নয়। অনেক দেশের প্রাকৃতিক পরিবেশ খাদ্য উৎপাদনের জন্য উপযুক্ত নয়। এ ক্ষেত্রে দক্ষ উৎপাদক দেশ থেকে আমদানি করাই হতে পারে কার্যকর সমাধান।”

তবে তিনি সতর্ক করে যোগ করেন, “স্বয়ংসম্পূর্ণতা না থাকলে বৈশ্বিক খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় সামান্য অস্থিরতাও যেমন- যুদ্ধ, খরা বা রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা- কোনো দেশের জন্য বড় সংকট ডেকে আনতে পারে।”

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নিশ্চিত থাকেন, দেশের অনিষ্ট হয় এমন কোনো কাজ হবে না : ড. ইউনূস

বেসরকারি সাউদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘প্রশাসক’ নিয়োগ দিল সরকার

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন সদস্যের ওপর হামলা

দেশের অনিষ্ট হয়, এমন কাজ করবেন না প্রধান উপদেষ্টা

লেখক প্রশান্ত হালদারের দরজায় রাখা হতো মলমূত্র

জুলাইকে ধারণ করে নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় জুলাই ঐক্যের

২৪ দিনে রেমিট্যান্স এলো ২৭ হাজার ৪০১ কোটি টাকা

নির্বাচন ৩০ জুনের ওই পারে যাবে না : প্রেস সচিব

এলএসডিতে শতাধিক গরু অসুস্থ, দুশ্চিন্তায় খামারিরা

চীন-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অংশীদারত্বে নতুন মাইলফলক

১০

গত ১৬ বছর দুর্নীতির চাষাবাদ হয়েছে : দুদক কমিশনার হাফিজ

১১

অবৈধ রেলিক সিটির চেয়ারম্যানসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে রাজউকের মামলা

১২

আগামী প্রজন্ম নজরুলকে নিয়েই এগোবে : প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

১৩

সোমবার থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন পৌনে চার লাখ শিক্ষক

১৪

ট্রাম্পের ‘গোল্ডেন ডোম’ কি আয়রন ডোমের চেয়েও শক্তিশালী হবে?

১৫

চোখ হারানো চিকিৎসারত চার জুলাই যোদ্ধার বিষপান

১৬

অজ্ঞান পার্টি সন্দেহে দুই ইরানি যুবককে গণধোলাই

১৭

সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ জারি

১৮

বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ প্রার্থীদের জন্য সুখবর

১৯

অবসর নিয়ে সিদ্ধান্ত নেননি ধোনি

২০
X