দাকোপ (খুলনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৯ আগস্ট ২০২৪, ১০:১৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সুন্দরবনে হরিণ নিধনে মেতে উঠেছে শিকারিরা

সুন্দরবনে চরে বেড়াচ্ছে হরিণ। ছবি : সংগৃহীত
সুন্দরবনে চরে বেড়াচ্ছে হরিণ। ছবি : সংগৃহীত

সুন্দরবনে উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে হরিণ শিকার। বনের আশপাশ এলাকার শিকারিরা বেপরোয়া হয়ে নিয়মিত হরিণ শিকার করে মাংস বিক্রি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বৈষম্যবিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন। এতে দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কাজে বিঘ্ন ঘটেছে। এ সুযোগে শিকারিরা হরিণ নিধনে মেতে উঠেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সুন্দরবন সংলগ্ন খুলনার দাকোপ উপজেলার রামনগর, বানীশান্তা, সুতারখালী ও কালাবগি গ্রামের চিহ্নিত হরিণ শিকারিরা বেপরোয়া হয়ে নিয়মিত হরিণ শিকার করেই চলছে। নদীর জোয়ারে রাতে এবং দিনে ২০ থেকে ২৫ জন দলবদ্ধভাবে সুন্দরবনে প্রবেশ করে হরিণ শিকার করছে।

হরিণ শিকারে ব্যবহার করা হচ্ছে নিজেদের তৈরি দড়ির ফাঁদ। বর্ষা মৌসুমে প্রত্যন্ত অঞ্চল সুতারখালী ও কালাবগি গ্রামের মাটির রাস্তা কাদা হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি না থাকায় শিকারিসহ তাদের স্বজনদের ঘরে ঘরে অবাধে রান্না হচ্ছে হরিণের মাংস।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জেলে জানান, হরিণ শিকার আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে। বনে ফাঁদ পেতে শিকার করা হরিণের মাংস বিক্রি করছে শিকারিরা।

জেলেরা বলছেন, শিকারিদের বিরুদ্ধে কথা বললে তাদের হুমকি দেওয়া হয়। এ ছাড়া বর্তমানে দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা না থাকায় গত ৮ থেকে ১০ দিনে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে শিকারিরা। যেসব শিকারিরা বনে যাচ্ছে তাদের দলের অনেকের নামে আগে থেকেই হরিণ শিকারের মামলা রয়েছে।

নলিয়ান গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় সংবাদকর্মী মো. আবুল বাশার বলেন, দেশের এই অস্থিতিশীল অবস্থায় এলাকার সুযোগ সন্ধানীরা প্রশাসন না থাকায় হরিণ শিকারে মেতে উঠেছে। তারা শিকার করা হরিণের মাংস নিয়মিত বিক্রি করছে এবং যতদিন যাচ্ছে, এই প্রবণতা বেড়েই চলছে।

দাকোপ উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান কিশোর কুমার রায় কালবেলাকে বলেন, বন বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যদি সঠিক নজরদারি না দেয়, তাহলে এই অপকর্ম চলতে থাকবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের মানুষের নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে। তা ছাড়া সবসময় আইন দিয়ে মানুষকে আটকানো যায় না, এ ক্ষেত্রে সচেতনতা বাড়াতে হবে। আর তা না হলে দুর্বৃত্তরা তো দুর্বৃত্তায়ন করবেই। সচেতনতা বাড়াতে পারলে সুন্দরবনে হরিণ শিকারিদের অপতৎপরতা ঠেকানো যাবে।

অভিযোগ রয়েছে, সুন্দরবন ও এর পাশের অঞ্চলে পেশাদার হরিণ শিকারিদের আছে বিশেষ সিন্ডিকেট এবং তাদের সঙ্গে থাকে এজেন্ট ব্যবসায়ীরা। এসব এজেন্টের মাধ্যমে কখনো অগ্রিম অর্ডার আবার কখনো মাংস এনে তারপর বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করা হয়। ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে খুশি মনে হরিণের মাংস কিনছে একশ্রেণির মানুষ।

সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক এজেডএম হাছানুর রহমান কালবেলাকে বলেন, দেশের এই পরিস্থিতিতে হরিণ, মাছ ও কাঁকড়া শিকার থেকে বিরত থাকার জন্য সবাইকে সচেতন করা হচ্ছে। আমাদের টহল দল প্রতিদিন সুন্দরবনে পাহারা দিচ্ছে। যারা অবৈধভাবে সুন্দরবনে প্রবেশ করে হরিণ, মাছ ও কাঁকড়া শিকার করছে, তারা মূলত রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট করছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ওয়াশিংটনে মার্কিন সামরিক হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত

ঢাকা বারের আয়োজনে জন্মাষ্টমী উৎসব উদযাপন

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বিমানবাহিনীর যৌথ মহড়া অনুষ্ঠিত

নতুন সংবিধানের জন্য গণপরিষদের নির্বাচনের দাবিতে এনসিপি নেতা শিশিরের বিক্ষোভ

সোশ্যাল মিডিয়াতে সরকারের বিষোদ্গার, ডা. নেয়ামতের বিরুদ্ধে মামলা

নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা হবে : এহসানুল হুদা

আখাউড়া দিয়ে ভারতে গেল ১ হাজার ১৯২ কেজি ইলিশ

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সুখবর

নুরের শারীরিক অবস্থা জানিয়ে জরুরি বার্তা

শুক্রবার ৮ বিভাগে জামায়াতের কর্মসূচি, কোন নেতার নেতৃত্ব কোথায়

১০

আগামী নির্বাচন যেন হয় মনে রাখার মতো : কায়কোবাদ

১১

দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেমকে ঘিরে ফেলছে ইসরায়েল

১২

কায়কোবাদকে দেখতে বাড়ির সামনে নেতাকর্মীদের ঢল

১৩

চাকসুতে ছাত্রশিবিরের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা

১৪

রাবিতে পোষ্য কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

১৫

সন্ত্রাসীদের হামলায় ৫ সাংবাদিক আহত

১৬

আমরা জোর করে ভোটে জিততে চাই না : আফরোজা আব্বাস

১৭

‘বিএনপি ক্ষমতায় এলে কোরআন-সুন্নাহ বিরোধী আইন পাস করবে না’

১৮

গ্রামীণফোনের যে সেবা বন্ধ থাকবে ১৩ ঘণ্টা

১৯

জনবল নিয়োগ দেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনী, পদ ৪৩০

২০
X