বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২
দাকোপ (খুলনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৯ আগস্ট ২০২৪, ১০:১৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সুন্দরবনে হরিণ নিধনে মেতে উঠেছে শিকারিরা

সুন্দরবনে চরে বেড়াচ্ছে হরিণ। ছবি : সংগৃহীত
সুন্দরবনে চরে বেড়াচ্ছে হরিণ। ছবি : সংগৃহীত

সুন্দরবনে উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে হরিণ শিকার। বনের আশপাশ এলাকার শিকারিরা বেপরোয়া হয়ে নিয়মিত হরিণ শিকার করে মাংস বিক্রি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বৈষম্যবিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন। এতে দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কাজে বিঘ্ন ঘটেছে। এ সুযোগে শিকারিরা হরিণ নিধনে মেতে উঠেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সুন্দরবন সংলগ্ন খুলনার দাকোপ উপজেলার রামনগর, বানীশান্তা, সুতারখালী ও কালাবগি গ্রামের চিহ্নিত হরিণ শিকারিরা বেপরোয়া হয়ে নিয়মিত হরিণ শিকার করেই চলছে। নদীর জোয়ারে রাতে এবং দিনে ২০ থেকে ২৫ জন দলবদ্ধভাবে সুন্দরবনে প্রবেশ করে হরিণ শিকার করছে।

হরিণ শিকারে ব্যবহার করা হচ্ছে নিজেদের তৈরি দড়ির ফাঁদ। বর্ষা মৌসুমে প্রত্যন্ত অঞ্চল সুতারখালী ও কালাবগি গ্রামের মাটির রাস্তা কাদা হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি না থাকায় শিকারিসহ তাদের স্বজনদের ঘরে ঘরে অবাধে রান্না হচ্ছে হরিণের মাংস।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জেলে জানান, হরিণ শিকার আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে। বনে ফাঁদ পেতে শিকার করা হরিণের মাংস বিক্রি করছে শিকারিরা।

জেলেরা বলছেন, শিকারিদের বিরুদ্ধে কথা বললে তাদের হুমকি দেওয়া হয়। এ ছাড়া বর্তমানে দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা না থাকায় গত ৮ থেকে ১০ দিনে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে শিকারিরা। যেসব শিকারিরা বনে যাচ্ছে তাদের দলের অনেকের নামে আগে থেকেই হরিণ শিকারের মামলা রয়েছে।

নলিয়ান গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় সংবাদকর্মী মো. আবুল বাশার বলেন, দেশের এই অস্থিতিশীল অবস্থায় এলাকার সুযোগ সন্ধানীরা প্রশাসন না থাকায় হরিণ শিকারে মেতে উঠেছে। তারা শিকার করা হরিণের মাংস নিয়মিত বিক্রি করছে এবং যতদিন যাচ্ছে, এই প্রবণতা বেড়েই চলছে।

দাকোপ উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান কিশোর কুমার রায় কালবেলাকে বলেন, বন বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যদি সঠিক নজরদারি না দেয়, তাহলে এই অপকর্ম চলতে থাকবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের মানুষের নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে। তা ছাড়া সবসময় আইন দিয়ে মানুষকে আটকানো যায় না, এ ক্ষেত্রে সচেতনতা বাড়াতে হবে। আর তা না হলে দুর্বৃত্তরা তো দুর্বৃত্তায়ন করবেই। সচেতনতা বাড়াতে পারলে সুন্দরবনে হরিণ শিকারিদের অপতৎপরতা ঠেকানো যাবে।

অভিযোগ রয়েছে, সুন্দরবন ও এর পাশের অঞ্চলে পেশাদার হরিণ শিকারিদের আছে বিশেষ সিন্ডিকেট এবং তাদের সঙ্গে থাকে এজেন্ট ব্যবসায়ীরা। এসব এজেন্টের মাধ্যমে কখনো অগ্রিম অর্ডার আবার কখনো মাংস এনে তারপর বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করা হয়। ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে খুশি মনে হরিণের মাংস কিনছে একশ্রেণির মানুষ।

সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক এজেডএম হাছানুর রহমান কালবেলাকে বলেন, দেশের এই পরিস্থিতিতে হরিণ, মাছ ও কাঁকড়া শিকার থেকে বিরত থাকার জন্য সবাইকে সচেতন করা হচ্ছে। আমাদের টহল দল প্রতিদিন সুন্দরবনে পাহারা দিচ্ছে। যারা অবৈধভাবে সুন্দরবনে প্রবেশ করে হরিণ, মাছ ও কাঁকড়া শিকার করছে, তারা মূলত রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট করছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ডাকসুর ফলাফল নিয়ে যে বার্তা দিলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ

ডাকসুর ফল ঘোষণা কীভাবে, জানালেন চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা

ডাকসুর ভোট গণনায় সময় লাগার কারণ জানালেন অধ্যাপক শামীম রেজা

বড় জয়ে এশিয়া কাপে দুর্দান্ত শুরু আফগানদের

ছাত্রদল নেতার সঙ্গে বাগবিতণ্ডা, ঢাবি শিক্ষক বললেন, ‘এই কষ্ট কোনোদিন ভুলব না’

ডাকসু : বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে আলোচনায় সরকার

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু কবে, জানাল ক্রিকইনফো

তিন হলের ভোট গণনা শেষ

শিবির ট্যাগ দিয়ে ডাকসুর নারী প্রার্থীর স্বামীকে হেনস্তা

জামাল-তপুদের নিরাপদে ফেরাতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার

১০

মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানিতে স্ববিরোধী তদন্ত সিআইডির

১১

নেপালে বাংলাদেশের টিম হোটেলে হামলার চেষ্টা

১২

ডাকসুর ফলাফল কখন ঘোষণা হবে, জানালেন চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা

১৩

এসএ২০ নিলামে দল পেলেন তাইজুল

১৪

তার মতো ছাত্রনেতা আমাদের জন্য লজ্জার : সারজিস

১৫

এমন ঘটনা কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না : ভিপি প্রার্থী ইমি

১৬

ডাকসু নির্বাচনে ক্রীড়াঙ্গনের তারকাদের ভোট সংক্রান্ত আক্ষেপ-উচ্ছ্বাস

১৭

‘ছবি তৈরি না হলে বেঁচে আছি কী করে’ ভুয়া খবর নিয়ে ক্ষোভ জয়ার

১৮

ঢাবি প্রশাসনসহ একটি অংশ শিবিরকে সমর্থন জোগাচ্ছে : আমান 

১৯

ভিপি প্রার্থী উমামার রহস্যজনক পোস্ট

২০
X