নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে দোকান ভাড়ার বকেয়া টাকা চাওয়ায় এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার (৩০ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের সালমদী বাজারে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যবসায়ীর নাম জাহাঙ্গীর হোসেন (৫৮)। তিনি ওই এলাকার মৃত তালেব আলীর ছেলে।
নিহত জাহাঙ্গীর সালমদী বাজারে একটি মুদির দোকান পরিচালনা করতেন। এ ছাড়া বাজারে তার মালিকানাধীন আরও তিনটি দোকান রয়েছে, যেগুলো ভাড়া দেওয়া ছিল।
নিহতের ছেলে রাসেল অভিযোগ করে বলেন, গত বছরের ৫ আগস্টের পর মাহমুদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তোতা মেম্বার সালমদী বাজারে তার বাবার কাছ থেকে বছরে ৩০ হাজার টাকা ভাড়ায় তিনটি দোকান ভাড়া নেন। তোতা মেম্বার বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির অর্থনৈতিক বিষয়ক সহসম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমনের অনুসারী। ভাড়া নেওয়া তিন দোকানের একটিতে বিএনপির স্থানীয় কার্যালয় স্থাপন করেন তোতা। বাকি দুটি দোকানের ভাড়া পরিশোধ করলেও বিএনপির কার্যালয় বানানো দোকানটির ভাড়া পরিশোধ করছিলেন না তিনি।
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তার বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন ভাড়া চাইতে বিএনপি কার্যালয়ে তোতা মেম্বারের কাছে যান। ভাড়ার বকেয়া টাকা চাইলে তোতা মেম্বার টালবাহানা শুরু করেন। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে জাহাঙ্গীরকে চড় মারেন তোতা মেম্বার। এরই মধ্যে তোতা মেম্বারের ছেলে খোকন, রাসেল এবং ভাতিজা সাদ্দাম, আলমসহ কয়েকজন তার বাবাকে বিএনপি কার্যালয়ের ভেতরেই এলোপাতাড়ি মারধর করে।
পরে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জাহাঙ্গীরকে মৃত ঘোষণা করেন। এ খবর পেয়ে বিএনপি নেতা তোতা মেম্বার ও তার অনুসারীরা আত্মগোপনে চলে যান।
নিহতের ছেলে রাসেলের ভাষ্য, বকেয়া দোকান ভাড়ার বিষয়টি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মাহমুদুর রহমান সুমনকে জানানো হলেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে মাহমুদুর রহমান সুমনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করেও তার কোনো সাড়া মেলেনি।
আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার নাসির উদ্দিন বলেন, ‘সেখানে (সালমদী বাজারে) কয়েকটি দোকান মিলে একটি অফিস করা হয়েছে। যার একটি অংশ জাহাঙ্গীরের। সকালে তিনি দোকানের ভাড়া চাইতে গেলে সেখানে মারধরের ঘটনা ঘটে। পরে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক জাহাঙ্গীরকে মৃত ঘোষণা করেন।’
এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছিল বলেও জানান ওসি।
মন্তব্য করুন