প্রথম দেখায় মনে হতে পারে এটি কোনো মরুভূমি অঞ্চলের দৃশ্য। তবে দূরে তাকালে সবুজ অরণ্য দেখলে সেই ভুল ভেঙে যাবে। নদীমাতৃক দেশ বাংলাদেশের কৃষিজমির দৃশ্য এটি। পানির অভাবে ফসলি জমি শুকিয়ে ফেটে গেছে। যার কারণে ফসল উৎপাদন নিয়ে বিপাকে পড়েছে কয়েক হাজার কৃষক।
চাঁদপুর সেচ প্রকল্প আওতাভুক্ত ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপসা উত্তর ইউনিয়নের বারপাইকা, বদরপুর, গাব্দেরগাওসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে পানির এমন সংকট দেখা যায়। সেচ কাজে দ্রুত পানি সরবরাহ না বাড়লে উপজেলার প্রায় ১০ হাজার ৮০ হেক্টর জমির বোরো আবাদ চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়তে পারে।
সরেজমিনে দেখা যায়, মাঘ মাসের শুরুতে কৃষকরা বোরো আবাদের জন্য চারা রোপণ করলেও পানির তীব্র সংকটে পড়ে তারা। কিছুদিন পুকুর, ডোবা ও খাল থেকে পানি নিয়ে সংকট নিরসনের চেষ্টা করা হয়। তবে এখন সব ধরনের জলাশয় শুকিয়ে যাওয়ায় পানির জন্য হাহাকার তৈরি হয়েছে। সময় মতো ধান রোপণ করতে পারছেন না অধিকাংশ কৃষক। যারা ধানের চারা লাগিয়েছেন তাদেরও চারাগুলো মরে যাচ্ছে পানির সংকটে।
এমন সংকটে পানি উন্নয়ন বোর্ড, সেচ প্রকল্প কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও কোনো সুরাহা পাননি কৃষকরা। ফলে প্রতিদিনই কৃষকের ‘কান্নায় ভিজছে’ ফসলের মাঠ।
চাঁদপুর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম জানান, সব কৃষকরা একসঙ্গে পানি তোলার কারণে সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত পানির সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কল্লোল কিশোর সরকার জানান, পানির প্রেসার যে পরিমাণ প্রয়োজন পানি উন্নয়ন বোর্ড তা বাড়াতে পারেনি। খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় এবং কৃষিজমি তুলনামূলক উঁচু হওয়ায় পানি সরবরাহ ব্যহত হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, অধিকাংশ পুকুর, খাল, নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় ঠিকভাবে পানি প্রবাহিত হচ্ছে না। ফলে সেচ সংকট দেখা দেয় কৃষি জমিতে। অবিলম্বে তাই খাল খনন অথবা গভীর নলকূপ স্থাপনের দাবি কৃষকদের।
মন্তব্য করুন