রাজধানীর উত্তরার আজমপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষণিকা বাসে হামলার ঘটনায় সঠিক তদন্ত ও বিচারের দাবি জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল, ছাত্রশিবির ও ছাত্রফ্রন্ট। একইসঙ্গে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়েও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংগঠনগুলো।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) পৃথক পৃথক বিবৃতিতে এসব দাবি জানান শাখা সংগঠনের নেতারা।
এক বিবৃতিতে ছাত্রদলের শাখা সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস ও সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন বলেন, উত্তরার আজমপুর এলাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ক্ষণিকা’ বাস রুটে চলাচলরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপরে ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় আহত নারী শিক্ষার্থীরাসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ও পরিবহন কর্মচারী বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে করে প্রতিদিন নিরাপদে ক্যাম্পাসে যাতায়াত করার চেষ্টা করে, তখন এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা শুধু শিক্ষার পরিবেশকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে না, বরং সার্বিকভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির দিকেও ইঙ্গিত করে।
এ হামলাকে ন্যক্কারজনক উল্লেখ করে শাখা শিবির সভাপতি এসএম ফরহাদ ও সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন খান বলেন, এ ধরনের সন্ত্রাসী হামলা শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্যই হুমকি নয়, বরং দেশের সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও জনমনে চরম উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করে।
নেতারা এই ঘটনার নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে জোর দাবি জানান। পাশাপাশি, আহত শিক্ষার্থীদের সুচিকিৎসার সম্পূর্ণ দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে গ্রহণ করার আহ্বান জানান।
নেতারা আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সব শিক্ষার্থী এবং ক্যাম্পাস-সংশ্লিষ্টদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সমন্বয়ের মাধ্যমে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
ছাত্রফ্রন্টের শাখা সভাপতি সাদেকুল ইসলাম সাদিক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হক এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, অবিলম্বে এই হামলায় জড়িতদের তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার দায়ভার প্রশাসনকে নিতে হবে।
নেতারা আরও বলেন, ঢাকাসহ দেশের নানা এলাকায় বারবার ভিন্ন ভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এবং স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে দেখা যাচ্ছে। এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের দায়িত্বহীনতা ও নিষ্ক্রিয়তা লক্ষণীয়। এমনকি সারাদেশে চলমান মব ভায়োলেন্সের ঘটনা এবং বিচারহীনতাও এই ঘটনাকে ত্বরান্বিত করেছে। এরকম সংঘর্ষের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিক শ্রেষ্ঠত্ববোধের ধারণাও একটা প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। এটা শিক্ষার্থীদের একতাবদ্ধতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়ন করতে শিক্ষার্থীদের উচিৎ সারাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঐক্যবদ্ধতাকে দৃঢ়তর করা।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দুপুর সোয়া ১টার দিকে দিকে গাজীপুর যাওয়ার পথে উত্তরার আজমপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টঙ্গী-গাজীপুর রুটের ক্ষণিকা বাসে হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার ঘটনায় বাসের ড্রাইভারসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে অন্তত তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী এবং ক্ষণিকা বাসের সভাপতি ফারজানা মুন্নি।
মন্তব্য করুন