ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হামাস ও ইসরায়েলের যুদ্ধে সবদিক থেকে ইসরায়েলকে সহায়তা দিয়ে আসছে পশ্চিমারা। ইসরায়েলি হামলায় হাজার হাজার ফিলিস্তিনি হতাহত হলেও ইসরায়েলপন্থি নীতি থেকে সরছে না এসব দেশ। উত্তর গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে এখন দক্ষিণ গাজার রাফা শহরে হামলার কথা বলছে ইসরায়েল। তবে সেখানে লাখ লাখ ফিলিস্তিনি মানুষ আশ্রয় নেওয়ায় ইসরায়েলি এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমারা। এমন পরিস্থিতিতে নিষেধ অমান্য করে রাফায় স্থল অভিযানে গেলে এবং গাজায় ত্রাণ সহায়তা প্রবেশে বাধা দিলে ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপের বিষয়টি বিবেচনা করছে যুক্তরাজ্য। বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বেশ কয়েকটি সূত্রের বরাতে এসব তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত না করে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রাফা শহরে স্থল অভিযান শুরুর নির্দেশ দিলে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘন করতে পারে। এর ফলে অস্ত্র রপ্তানির লাইসেন্স প্রদানের বিষয়ে মন্ত্রীদের দেওয়া আইনি পরামর্শ পরিবর্তন হতে পারে, যা ইসরায়েলের কাছে নির্দিষ্ট কিছু অস্ত্র বিক্রির ওপর প্রভাব ফেলবে।
অবশ্য যুক্তরাজ্য ইসরায়েলের প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ নয়। তবে ব্রিটিশ নীতির আমূল পরিবর্তনে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর ওপর চাপ বাড়বে।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে নির্মূলের নামে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার একের পর এক শহরে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। গাজার প্রায় শহর-নগরকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে এখন রাফা শহরে স্থল অভিযানের ঘোষণা দিয়েছে দেশটি। আসন্ন এই হামলা বন্ধের দাবি বিশ্বজুড়ে জোরালো হলেও সব চাপ উপেক্ষা করে রাফায় স্থল অভিযানের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে তেলআবিব।
রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ইসরায়েলের যুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রিসভার সদস্য বেনি গ্যান্টজ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যদি হামাস ১০ মার্চের মধ্যে গাজায় বন্দি সব ইসরায়েলিকে মুক্তি না দেয় তবে রাফা শহরে আক্রমণ চালানো হবে। এর মাধ্যমে রাফায় কখন ইসরায়েলি সেনারা প্রবেশ করতে পারে তা প্রথমবারের মতো জানালো দেশটি।
গাজার সর্বদক্ষিণের শহর হলো রাফা। এটি মিসরের সীমান্তবর্তী একটি শহর। ইসরায়েলি হামলা থেকে বাঁচতে দক্ষিণে সরতে সরতে সর্বশেষ এখানে গাজার ২৩ লাখ মানুষের মধ্যে অর্ধেকের বেশি আশ্রয়গ্রহণ করেছেন। প্রচণ্ড ঠান্ডায় মূলত তাঁবু ও সরকারি ভবনে তারা বসবাস করছেন।
মন্তব্য করুন