কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৬ মার্চ ২০২৫, ১০:৪৪ এএম
আপডেট : ০৭ মার্চ ২০২৫, ০৮:০৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ইসরায়েলকে বাঁচাতে পশ্চিমারা মরিয়া

ট্রাম্প ও নেতানিয়াহু। ছবি : সংগৃহীত
ট্রাম্প ও নেতানিয়াহু। ছবি : সংগৃহীত

গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার পর বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় উঠেছে। ইসরায়েল প্রথমবারের মতো এমন এক নজরদারির মুখে পড়েছে, যা তাকে কার্যত একঘরে করে তুলেছে। কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলো নিজেদের নীতি বদলানোর বদলে উল্টো যুদ্ধবিরতির পক্ষে কথা বলা নাগরিক সমাজের ওপর চড়াও হয়েছে। এমনকি জাতিসংঘের মানবাধিকার সংগঠনগুলোকেও টার্গেট করা হচ্ছে।

আরব নিউজের মতামত বিভাগে প্রকাশিত এক নিবন্ধে ইসরায়েলকে বাঁচাতে পশ্চিমা দেশে দমনপীড়নের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। প্রখ্যাত ফিলিস্তিনি-আমেরিকান সাংবাদিক, লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক রামজি বারুদ নিবন্ধটি লেখেন। তিনি আন্তর্জাতিক রাজনীতি, মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত, বিশেষ করে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকট নিয়ে লেখালেখি ও গবেষণা করে থাকেন।

রামজি বারুদ লিখেন- ১৮ ফেব্রুয়ারি জার্মানির পুলিশ জাঙ্গ ওয়েল্ট পত্রিকার অফিসে অভিযান চালায়, যেন তারা কোনো ভয়ংকর সন্ত্রাসী ধরতে যাচ্ছে! কারণটা ছিল ফ্রান্সেস্কা আলবানেজের বক্তব্য—তিনি একজন ইতালীয় আইনজীবী ও জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ দূত, যিনি গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধের কড়া সমালোচক।

যদি জাতিসংঘ হস্তক্ষেপ না করত, তাহলে শুধু ইসরায়েলের অপরাধের জন্য জবাবদিহি চাওয়ার অপরাধে আলবানেজকে গ্রেপ্তার করা হতে পারত! তবে শুধু জার্মানি নয়, যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য পশ্চিমা দেশও এ নৈতিক সংকটের অংশ হয়ে গেছে। তারা শুধু ইসরায়েল আর নিজেদের রক্ষা করতে চায় না, বরং আন্তর্জাতিক বিচারক ও সংস্থাগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করতেও পিছপা হচ্ছে না।

১৩ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রধান কৌঁসুলি কারিম খানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, কারণ তিনি ইসরায়েলের নেতাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করেছিলেন। খান যা করেছেন, তা আগে কেউ করেনি—ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চেয়েছিলেন। এখন নেতানিয়াহু ও গ্যালান্ট ‘যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ’-এর দায়ে অভিযুক্ত।

এ সংকটের সবচেয়ে ভয়াবহ দিক হলো, যারা আন্তর্জাতিক আইন প্রতিষ্ঠা করতে চায়, তারাই এখন অপরাধী হিসেবে অভিযুক্ত হচ্ছে! কারিম খান পশ্চিমা গণমাধ্যমে কটাক্ষের শিকার হয়েছেন, এমনকি যুক্তরাষ্ট্র তার ওপর নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছে।

তবে সব অন্ধকারের মধ্যেও আশার আলো আছে। এই পুরো পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক আইন ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার সংস্কারের একটা সুযোগ এনে দিয়েছে। যেখানে বিচার সবার জন্য সমান হবে, যেখানে ক্ষমতাবানদের জন্য আলাদা আইন থাকবে না। যারা এখনো ইসরায়েলকে সমর্থন করছে, তারা কার্যত আন্তর্জাতিক আইনকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। কিন্তু এ সিদ্ধান্তের পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে।

গাজার যুদ্ধ যদি কিছু শেখায়, তবে সেটা হলো এখন সময় এসেছে এমন একটা বিশ্ব গঠনের, যেখানে ক্ষমতাবানরা নয়, বরং ন্যায়ের ভিত্তিতেই সবকিছু চলবে। যেখানে নিরপরাধ শিশুরা মরবে না, যেখানে সামরিক শক্তি নয়, বরং ন্যায্যতাই সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

ঘটনাপ্রবাহ: ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাত
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সন্ধ্যার মধ্যে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস 

সাদমানের শতকের ঝলকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ

এবার বাংলাদেশে আসতে আগ্রহী চীনের ইন্টারনেট জায়ান্ট টেনসেন্ট

বিএনপি নেতার মাদকসেবনের ভিডিও ভাইরাল, দাবি ‘কাশির ওষুধ’

টঙ্গীতে কারখানা চালুর দাবিতে শ্রমিক বিক্ষোভ, হামলায় আহত ১৫ 

শিশুদের জন্য অন্তত ২০ শতাংশ বাজেট রাখার দাবি বিশিষ্টজনদের

বাড়তি মজুরি দিয়েও মিলছে না ধান কাটার শ্রমিক

মোদির কাছে বিশেষ চিঠি, কী বার্তা

অবৈধ আদেশ পালন করতে গিয়ে পুলিশ জনরোষের শিকার হয়েছে : প্রধান উপদেষ্টা

জুনেই সেলেসাওদের দায়িত্ব নিচ্ছেন আনচেলত্তি

১০

ইউআইইউ’র বন্ধের ঘটনায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির উদ্বেগ

১১

ঝোড়ো শতকে রেকর্ডের পাহাড় গড়লেন ১৪ বছরের বৈভব

১২

পুলিশ সপ্তাহ উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা

১৩

ইসরায়েলি বিমান হামলায় আরও ৭১ ফিলিস্তিনি নিহত

১৪

আজ ইচ্ছাপূরণের দিন 

১৫

দুই মামলায় জামিন নামঞ্জুর / তারেক রহমানের খালাতো ভাই তুহিন অ্যাম্বুলেন্সে করে কারাগারে 

১৬

সৌদি ফেরা হলো না রুহেলের, ভাইয়ের হাতে গেল প্রাণ

১৭

চট্টগ্রামে সাদমান-বিজয়ের ব্যাটে চড়ে বাংলাদেশের দাপট

১৮

কূটনীতিকসহ পাকিস্তান দূতাবাসের ৮ কর্মকর্তাকে দেশে ফেরত

১৯

ফসলি মাঠে কৃষকের মরদেহ, শরীরে আঘাতের চিহ্ন

২০
X