ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলি কোহেনের সঙ্গে বৈঠক করায় লিবিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী নাজলা মাঙ্গুশকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এর পরপরই নতুন নির্দেশনা জারি করেছে নেতানিয়াহু প্রশাসন। বুধবার (৩০ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আবর নিউজ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) নতুন একটি নির্দেশনা জারি করেছেন। এতে সকল গোপন কূটনৈতিক গোপন বৈঠকের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অগ্রিম অনুমোদন নিতে বলা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখপাত্র বলেন, লিবিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বৈঠকের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর কূটনৈতিক পরিবেশ উত্তপ্ত হওয়ায় এমন নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এদিকে বৈঠকের পর লিবিয়াজুড়ে বিক্ষোভের কারণে নিরাপত্তার জন্য তুরস্কে পালিয়ে গেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী নাজলা মাঙ্গুশ।
সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলি কোহেনের সঙ্গে বৈঠক করেন লিবিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী নাজলা মাঙ্গুশ। প্রথমে বিষয়টি গোপন থাকলেও পরে গত রোববার (২৭ আগস্ট) ইসরায়েল বিষয়টি প্রকাশ্যে নিয়ে আসে। এরপরই লিবিয়াজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। ফলে দেশটির ঐক্য সরকারের প্রধানমন্ত্রী আবদুল হামিদ আল দাবিবাহ মাঙ্গুশকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। এ ছাড়া লিবিয়ার সাথে ইসরায়েলের ঐতিহাসিক বৈরিতা রয়েছে।
সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার নেতানিয়াহু দেশটির সকল মন্ত্রণালয়ে একটি নির্দেশনা পাঠিয়েছেন। এতে যে কোনো রাজনৈতিক আলোচনার জন্য কূটনৈতিক বৈঠকের বিষয়ে তার কার্যালয় থেকে অনুমোদন নিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া স্পর্শকাতর বিষয়ে নেতানিয়াহু নিজেই অনুমোদন করবেন বলে বলা হয়েছে।
গত সপ্তাহে এলি কোহেনের সঙ্গে ইতালির রোমে বৈঠক করেন মাঙ্গুশ। এ বৈঠক নিয়ে ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতি দিলে গত রোববার বিষয়টি জানাজানি হয়। তাদের এই বৈঠকের খবরে লিবিয়ার রাজধানী ও অন্যান্য প্রদেশে রাতেই শত শত মানুষ বিক্ষোভ করেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, রোববার রাতে রাজধানী ত্রিপোলিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে মাঙ্গুশের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন শত শত মানুষ। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী আবদুল হামিদের পদত্যাগের দাবিতে তার বাসভবনের সামনেও বিক্ষোভ হয়েছে। এ সময় কয়েকজন বিক্ষোভকারী প্রধানমন্ত্রীর ত্রিপোলির বাসায় আগুন দেন।
এদিকে জনরোষের মুখে মাঙ্গুশকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়ে তার স্থলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে ফাতাল্লাহ আল জানিকে নিয়োগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী আবদুল হামিদ। ফাতাল্লাহ আল জানি বর্তমানে দেশটির যুবমন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন। এ ছাড়া মাঙ্গুশের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা হবে বলেও জানিয়েছেন আবদুল হামিদ।
ইসরায়েলকে এখনো স্বীকৃতি দেয়নি লিবিয়া। তেল আবিবের সঙ্গে তাদের কোনো কূটনৈতিক সম্পর্কও নেই। এমনকি লিবিয়ায় ইসরায়েলি কোনো কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের দায়ে ৯ বছর কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
মন্তব্য করুন