কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৪৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম ভাষণে যা বললেন ট্রাম্প

শপথ নেওয়ার পর প্রথম ভাষণ দেন ট্রাম্প। ছবি : সংগৃহীত
শপথ নেওয়ার পর প্রথম ভাষণ দেন ট্রাম্প। ছবি : সংগৃহীত

প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার (২০ জানুয়ারি) তার শপথ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। শপথ নেওয়ার পর প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম ভাষণ দিয়েছেন তিনি। এতে বিভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করেন ট্রাম্প।

সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও আলজাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রথম ভাষণে ট্রাম্প বলেন, এখন থেকেই আমেরিকার স্বর্ণযুগের শুরু হয়েছে। আজ থেকে আমাদের দেশ সমৃদ্ধ হবে এবং সারা বিশ্বে আবার সম্মানিত হবে। আমরা প্রতিটি জাতির অহংকারের কারণ হব।

বক্তব্যে তিনি তার ওপর হত্যাচেষ্টার বিষয়টিও তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, তার বেঁচে যাওয়ার একটি কারণ রয়েছে। আর তা হলো আমেরিকাকে আবারও মহান করা। এমনকি এটি ছিল তার নির্বাচনের স্লোগান। ( মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন।)

এর আগে সংবাদমাধ্যম জানায়, প্রথমবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার সময় ট্রাম্প একদিনে মাত্র একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছিলেন—ওবামাকেয়ার বাতিলের আদেশ। তবে এবার, তার দ্বিতীয় মেয়াদে শপথের দিনই অন্তত ১০টি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করার পরিকল্পনা রয়েছে। এগুলো হলো

১. গণ অভিবাসন এবং অবৈধ অভিবাসীদের তাড়ানো

ট্রাম্পের প্রথম দিনের এজেন্ডার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো অভিবাসন। তিনি অবৈধ অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। নিউ ইয়র্ক সিটিতে এক সমাবেশে ট্রাম্প বলেছিলেন, প্রথম দিনেই আমি আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অভিবাসী তাড়ানোর প্রোগ্রাম চালু করব, যাতে অপরাধীরা বের হয়ে যায়। তবে এই পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন করা কতটা সম্ভব তা নিয়ে অভিবাসন সমর্থকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

২. জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বন্ধ করা

ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ১৪তম সংশোধনী অনুযায়ী জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বন্ধ করতে চান। তিনি বলেছেন, অবশ্যই, আমি প্রথম দিনেই এই পদক্ষেপ নেব। এই পদক্ষেপটি আইনি এবং বাস্তবিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে, কারণ এটি সংবিধানের ওপর প্রশ্ন তোলে। এ ছাড়া ট্রাম্প বাইডেন প্রশাসনের সীমান্ত নীতির পরিবর্তন করে 'টাইটেল ৪২' নামক পাবলিক হেলথ আইন প্রয়োগের মাধ্যমে অভিবাসীদের তাড়ানোর পরিকল্পনাও করেছেন।

৩. ক্যাপিটল হিলে হামলাকারীদের ক্ষমা

২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে হামলা করা কয়েকজনের ক্ষমা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি জানিয়েছেন, প্রথম দিনেই বিষয়টি দেখব। তিনি এমনকি বলেন, প্রথম নয় মিনিটের মধ্যেই আমি হামলাকারীদের ক্ষমা করে দেব। তবে এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়ে আইনের শাসন ও গণতন্ত্র নিয়ে বিতর্ক উঠেছে।

৪. রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ

প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ট্রাম্প ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের অবসান ঘটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি পুতিন ও জেলেনস্কিকে জানি। তারা আমাকে সম্মান করে, কিন্তু বাইডেনকে তারা সম্মান করে না। ট্রাম্প মনে করেন, তিনি যদি প্রেসিডেন্ট হন, তবে তিনি দ্রুত এই যুদ্ধের সমাধান করতে পারবেন।

৫. শুল্ক আরোপ

ট্রাম্প তার শপথের দিন ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন মেক্সিকো এবং কানাডার মতো প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদারদের বিরুদ্ধে। এই শুল্ক তাদের পণ্য আমদানির ওপর আরোপ করা হবে, যা কিছুটা উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে অর্থনীতিবিদদের মধ্যে, কারণ এটি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

৬. বাইডেনের ‘ইলেকট্রিক ভেহিকল ম্যান্ডেট’ বাতিল

ট্রাম্প বাইডেনের ২০৩০ সালের মধ্যে মার্কিন বাজারে ৫০ শতাংশ কম কার্বন নিঃসরণকারী গাড়ি বিক্রির লক্ষ্য নির্ধারণ করা ‘ইলেকট্রিক ভেহিকল ম্যান্ডেট’ বাতিল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রথম দিনেই আমি এই ম্যান্ডেট বাতিল করব। তার মতে, এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহ্যবাহী গ্যাসচালিত গাড়ি শিল্পের জন্য ক্ষতিকর।

৭. তেলকূপ খনন বৃদ্ধি

ট্রাম্প বলেছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে তেল উৎপাদন বাড়ানোর জন্য আরও তেলকূপ খনন করবেন। তার মতে, তেলের উৎপাদন বাড়ানো যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি খরচ কমাবে। তবে পরিবেশবাদী গোষ্ঠীগুলো এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, কারণ এটি জলবায়ু পরিবর্তনকে আরও তীব্র করতে পারে।

৮. নারীদের খেলায় ট্রান্সজেন্ডারদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ

ট্রাম্প নারীদের খেলাধুলায় ট্রান্সজেন্ডার অ্যাথলেটদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, প্রথম দিনেই আমি নারীদের খেলাধুলা থেকে পুরুষদের শতভাগ সরিয়ে দেব। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ এলজিবিটিকিউ+ সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে, যারা মনে করেন এই নীতি বৈষম্যমূলক এবং ক্ষতিকর হতে পারে।

৯. জেন্ডার-অ্যাফার্মিং কেয়ার বন্ধ

ট্রাম্প জেন্ডার-অ্যাফার্মিং কেয়ার (যেমন ট্রান্সজেন্ডার চিকিৎসা) বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তার মতে, বাইডেনের সরকার এই চিকিৎসার মাধ্যমে তরুণদের ক্ষতি করছে এবং তিনি প্রথম দিনেই এই নীতিমালা বাতিল করবেন।

১০. মেড-ইন-আমেরিকা গাড়ি শিল্প পুনরুজ্জীবিত

ট্রাম্প আমেরিকান গাড়ি শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তার মতে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জন্য একটি ভোট মানে ভবিষ্যতের গাড়ি আমেরিকায় তৈরি হওয়া। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের গাড়ি শিল্পে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে চান, যাতে দেশীয় উৎপাদন এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পায়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

ঘটনাপ্রবাহ: যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফ জওয়ান গুলিবিদ্ধ

বিএনপির মনোনয়ন না পেয়ে যে সিদ্ধান্ত নিলেন রুমিন ফারহানা

জামায়াত ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দিলেন ২১ নেতাকর্মী

ভারতীয় ক্রিকেটারদের আচরণ নিয়ে আইসিসিতে অভিযোগ জানাবে পিসিবি

উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন হচ্ছে কি না, জানালেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব

নোয়াখালীতে ২ গ্রুপের সংঘর্ষের নেপথ্যে

বিপিএল শুরু হওয়ার আগেই রাজশাহীর অনন্য নজির

এক রাতে রাশিয়ার বিপুল ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত

খলিফাদের নামে ওসমান হাদির তিন ভাইয়ের নাম রাখে পরিবার

বুধবার রাজধানীর যেসব এলাকায় গ্যাস বন্ধ ৫ ঘণ্টা

১০

বিমানবন্দরে ৪ যাত্রীর ব্যাগে মিলল ৩০ লাখ টাকার সিগারেট

১১

ভিড়ের মধ্যে ঠেলাঠেলির ভিডিও ভাইরাল, যে ব্যাখ্যা দিলেন ইশরাক

১২

চরের জলবায়ু সহিষ্ণু উন্নয়নকে যথাযথ অগ্রাধিকার দিতে হবে

১৩

নতুন রেকর্ডের কাছাকাছি স্বর্ণের দাম

১৪

বর্জ্য পোড়ানোর ছবি পাঠালে দেওয়া হবে পুরস্কার

১৫

তারেক রহমানের অপেক্ষায় পিতৃভূমি বগুড়ার মানুষ

১৬

এলডিপি থেকে চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীর পদত্যাগ

১৭

ঢাবি বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শনিবার, পরীক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা

১৮

ভারতে কূটনৈতিক মিশনে হামলা, ঢাকার গভীর উদ্বেগ

১৯

সাহায্যের আবেদনে যত টাকা পেলেন তাসনিম জারা

২০
X