বগুড়ার সারিয়াকান্দি থানার দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ দাবি এবং গ্রহণের অডিও-ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী।
গত ২০ জুলাই পোস্ট অফিসের মাধ্যমে অভিযোগটি দায়ের করেন সারিয়াকান্দি উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের বরইকান্দি গ্রামের মৃত হযরত আলীর ছেলে সুলতান সরকার। অভিযোগের অনুলিপি বগুড়া জেলা প্রশাসক, আইজিপি, ডিআইজি রাজশাহী এবং বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার বরাবর পাঠানো হয়েছে।
অভিযুক্তরা হলেন—সারিয়াকান্দি থানার এসআই আব্দুল খালেক এবং এএসআই রেজাউল করিম। এর মধ্যে এএসআই রেজাউল করিম অন্যত্র বদলি হয়েছেন। তবে এসআই আব্দুল খালেক দাবি করেন, সুলতানের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমরা ওসি স্যারের নির্দেশ সবসময় মান্য করি।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সুলতান সরকারের সঙ্গে তার ওয়ারিশ মৃত জিল্লার রহমান সরকারের ছেলে রফিকুল ইসলামের সঙ্গে দীর্ঘদিনের জমাজমি সংক্রান্ত বিবাদ চলছে। তদন্তের ভার পড়ে এএসআই রেজাউল করিমের ওপর। রেজাউল করিম সুলতান সরকারকে থানায় ডেকে নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য খরচাপাতি দাবি করেন, যা ভিডিও ক্যামেরায় ধারণ করেন সুলতান সরকার। কাঙ্ক্ষিত ঘুষ না পেয়ে রেজাউল করিম সুলতান সরকারের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন।
পরে ঘুষ গ্রহণ সম্পর্কিত ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। একই বিষয়ে আরও একটি তদন্তভার এসআই আব্দুল খালেকের ওপর পড়ে। আব্দুল খালেকেরও ঘুষ দাবি সম্পর্কিত অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ওই অডিও রেকর্ডে আব্দুল খালেককে বলতে শোনা যায়, ‘সুলতান ভাই আমার লোকজন আপনার ওখানে গিয়েছিল, তাদের আপনি তেল খরচাটাও দিলেন না’। পরে কাঙ্ক্ষিত ঘুষ না পেয়ে এসআই আব্দুল খালেক সুলতানের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। পরে সুলতান সরকার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বরাবর অভিযোগ দাখিল করেন এবং এর অনুলিপি সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে পাঠান।
সুলতান সরকার অভিযোগে আরও বলেন, আমাদের নালিশি সম্পত্তিতে স্থিতfবস্থা বজায় রাখতে আদালত থেকে পরিপত্র জারি করা হয়েছে। অথচ আমার প্রতিপক্ষ জোরপূর্বক জমির ধান কেটে নিয়েছে, যা তদন্তে সত্য প্রমাণিত হওয়ায় তারা গ্রেপ্তার হয়েছে। পরে তারা মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে পুলিশের সহায়তায় নালিশি সম্পত্তিতে জোরপূর্বক দুটি টিনশেড ঘর নির্মাণ করেছে। অথচ এসআই আব্দুল খালেক প্রতিবেদন দাখিল করেছেন, ‘নালিশি সম্পত্তিতে উভয়পক্ষ যে যে অবস্থানে ছিলেন সেই অবস্থানে শান্তিপূর্ণ বসবাস করিতেছে।’
এ প্রসঙ্গে এসআই আব্দুল খালেক বলেন, সুলতানের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমরা ওসি স্যারের নির্দেশ সবসময় মান্য করি। শান্তিপূর্ণ প্রতিবেদন ছাড়া অশান্তিপূর্ণ প্রতিবেদন দেওয়ার আমাদের কোনো এখতিয়ার নেই।
এএসআই রেজাউল করিম অন্যত্র বদলি হওযায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সারিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জামিরুল ইসলাম বলেন, অভিযোগের বিষয়টি আমরা জানি। বিষয়টি তদন্তানাধীন রয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে বোঝা যাবে আসলে কে দোষী।
মন্তব্য করুন