

লালমনিরহাটে ঘুষের পুরো টাকা না পেয়ে মামলা তদন্তে জালিয়াতি ও বাদীর পক্ষে প্রতিবেদন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মামুনুর রশীদের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় শহরের গল্পকথা রেস্টুরেন্টে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন বুলবুলী বেগম নামের এক নারী। এর আগে সোমবার (২৭ অক্টোবর) জেলা পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম বরারর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ জানুয়ারি লালমনিরহাট সদর উপজেলার হারাটি ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুর রশিদ (৩৯) বাদী হয়ে তার স্ত্রী বুলবুলী বেগমসহ আটজনের বিরুদ্ধে লালমনিরহাট অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১-এ একটি মামলা করেন। আদালত মামলাটির তদন্তভার দেন জেলা গোয়েন্দা শাখাকে (ডিবি)।
তদন্তের দায়িত্ব পান লালমনিরহাট ডিবি এসআই মো. মামুনুর রশীদ। অভিযোগ অনুযায়ী, তদন্তে মামলার সত্যতা পেলেও তিনি বুলবুলী বেগমের পরিবারের কাছে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। পরে তারা ২০ হাজার টাকা দিলেও অবশিষ্ট ৩০ হাজার টাকা না দেওয়ায় প্রায় এক বছর ধরে তিনি প্রতিবেদন দাখিল না করে সময়ক্ষেপণ করেন। অবশেষে গত ২৬ অক্টোবর হঠাৎ করেই মামলার প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে বাদী আব্দুর রশিদের পক্ষে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন এসআই মামুনুর রশীদ। পরে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বুলবুলী বেগম ও তার পরিবারের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন এবং বাড়াবাড়ি করলে মিথ্যা মামলায় জেলে পাঠানো হবে বলে হুমকি দেন।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী বুলবুলী বেগম বলেন, আমরা গরিব মানুষ। ২০ হাজার টাকা দিয়েছি, বাকি টাকা না দিতে পারায় তিনি আমাদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দিয়েছেন। এখন ন্যায়বিচার চাই। এসআই মামুনের শাস্তি দাবি জানাই।
অভিযোগের বিষয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ওসি) সাদ আহম্মেদ বলেন, ভদ্রমহিলা লিখিত অভিযোগ পুলিশ সুপার বরাবর করেছেন, আমার কাছে করেননি। যদি করতেন, তাহলে আমি নিজে তদন্ত করতাম। এখন যেহেতু বিষয়টি পুলিশ সুপার বরাবর গেছে, তিনি তদন্ত কমিটি গঠন করবেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ডিবির এসআই মামুনুর রশীদ ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, তদন্ত শেষ করেই সঠিক প্রতিবেদন দিয়েছি। তা কার বিপক্ষে গেল, সেটি দেখার বিষয় নয়।
লালমনিরহাট জেলা পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম বলেন, অভিযোগটি যদি সত্য হয় এবং প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে অবশ্যই তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গণতান্ত্রিক দেশে যে কেউ অভিযোগ জানাতে পারেন। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।
মন্তব্য করুন