ভারতের হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ইওম-ই-তাশাকুর পালন করছে পাকিস্তান। দেশটিতে ভারতের হামলায় নিহত সেনা ও শহীদদের জন্য এ দিবস পালন করা হচ্ছে।
শুক্রবার (১৬ মে) নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ইওম-ই-তাশাকুর পালন করছে দেশটি। খবর জিও নিউজের ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানজুড়ে শুক্রবার নাগরিকরা একত্রিত হয়ে ইউম-ই-তাশাকুর (কৃতজ্ঞতা দিবস) পালন করেছে। অপারেশন বুনিয়ান-উম-মারসুসের সাফল্য উদযাপন এবং পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি সংহতি প্রকাশ করে এ দিবসটি পালিত হচ্ছে।
জিও নিউজ জানিয়েছে, হাফিজাবাদে আঞ্জুমান তাজিরান প্রেস ক্লাব থেকে ফাওয়ারা চক পর্যন্ত পাকিস্তানের সামরিক সাফল্যের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে একটি র্যালি করা হয়েছে। এছাড়া কামালিয়ায় সহকারী কমিশনারের কার্যালয় থেকে কালমা চক পর্যন্ত একটি বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সমাবেশে নাগরিকরা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন।
সুক্কুরে মিউনিসিপাল করপোরেশন ওয়াকিং ট্র্যাক পার্কে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে সিন্ধের সবচেয়ে উঁচু জাতীয় পতাকা ৩০০ ফুট উচ্চতায় উত্তোলন করা হয়। মুলতানে জেলা কাউন্সিল অফিস থেকে চক কাচেরি পর্যন্ত একটি বড় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ধর্মীয় পণ্ডিত এবং নাগরিকরা অংশগ্রহণ করেন।
মুজাফফারাবাদে এ দিবসে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে। এ সময় সেখানে মন্ত্রী এবং প্রধান সচিব ফুলের মালা অর্পণ করেন। এছাড়া প্রশাসন তাদের গার্ড অব অনার প্রদান করে। একইভাবে, আথমুকামে জেলা কমপ্লেক্সে একটি পতাকা সম্মান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় এবং পুলিশ পাকিস্তানি ও কাশ্মীরি পতাকা দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়।
ফয়সালাবাদে জেলা কাউন্সিল চক থেকে ঘণ্টাঘর চক পর্যন্ত একটি বড় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে নেতৃত্ব দেন কমিশনার, ডেপুটি কমিশনার, আরপিও এবং স্থানীয় এমএনএরা। ডেরা গাজী খানের সম্প্রদায় পুলিশ লাইন্স মসজিদে শহীদদের সম্মানে কোরআন খতম করা হয়েছে।
রাওয়ালপিন্ডিতে চকলালা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড জাতীয় ঐক্য ও নিরাপত্তার জন্য দোয়া এবং পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। গোজরায় আঞ্জুমান তাজিরান এবং রেলওয়ে রোডের বাসিন্দারা বিশাল সমাবেশ পালন করেছেন। এতে বার অ্যাসোসিয়েশন এবং খ্রিস্টান সম্প্রদায় অংশগ্রহণ করে এবং শহীদদের জন্য কোরআন তেলাওয়াত ও দোয়া করা হয়।
এর আগে পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, ভারতের অপ্রত্যাশিত ও কাপুরুষোচিত আক্রমণে পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ১১ সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৭৮ সেনা।
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, এ যুদ্ধে ৪০ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে সাত নারী ও ১৫ শিশু রয়েছে। এ ছাড়া হামলায় আরও অন্তত ১২১ জন আহত হয়েছেন।
আইএসপিআর জানায়, গত ৬-৭ মে রাতে ভারত পেহেলগাম হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে অপারেশন সিঁদুরের নামে পাকিস্তানে বিমান হামলা শুরু করে, যার ফলে বেসামরিক হতাহতের ঘটনা ঘটে। এরপর উভয়পক্ষ সপ্তাহব্যাপী ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় জড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হস্তক্ষেপ করে আমেরিকা। গত শনিবার (১০ মে) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি স্থাপিত হয়েছে।
মন্তব্য করুন