ব্রাহ্মণপাড়া (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০২ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:২৪ এএম
অনলাইন সংস্করণ

অপরূপ সৌন্দর্যের জলফড়িং পিঙ্গল বুনো উকরি

অনিন্দ্যসুন্দর সৃষ্টি জলফড়িং পিঙ্গল বুনো উকরি। কালবেলা
অনিন্দ্যসুন্দর সৃষ্টি জলফড়িং পিঙ্গল বুনো উকরি। কালবেলা

সৃষ্টিকর্তার বৈচিত্র্যময় সৃষ্টির সমাহার পৃথিবীকে রঙিন ও প্রাণবন্ত করে রেখেছে। এসব সুন্দর সৃষ্টির মধ্যে অনিন্দ্যসুন্দর সৃষ্টি জলফড়িং পিঙ্গল বুনো উকরি। এটির অপরূপ সৌন্দর্যের কারণে মুগ্ধ করে সব বয়সী মানুষকে। ফড়িংটির ডানার নিখুঁত কারুকাজে চোখ আটকে যাবে যে কারোর। জলফড়িংয়ের মোহনীয় সৌন্দর্যে সুন্দর প্রকৃতি যেন আরও বেশি প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে।

এ দৃশ্য দেখা গেছে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়নের বেজুরা এলাকার একটি জলাশয়ের পাড়ের ঝোপের গাছে পেঁচানো লতায়।

জানা গেছে, পিঙ্গল বুনো উকরির বৈজ্ঞানিক নাম নিউরোথেমিস ফুলভিয়া। এটি লিবেলুলিডি গোত্রের অন্তর্গত। এটির ইংরেজি নাম ফুলভাস ফরেস্ট স্কিমার। এটি এক ধরনের জলফড়িং বা গঙ্গাফড়িং প্রজাতির মাঝারি আকারের ফড়িং। এটি ফড়িংটিকে বাংলায় পিঙ্গল বুনো উকরি বা পানিকাটা নামে ডাকা হয়। চার ডানা বিশিষ্ট এই ফড়িং মরিচা লাল বা পিঙ্গল রঙের হয়। বাংলাদেশে লিবেলুলিডি গোত্রের ৪৫ প্রজাতির জলফড়িং রয়েছে, এরমধ্যে পিঙ্গল বুনো উকরি একটি প্রজাতি। এরা সাধারণত বনে বাদাড়ে ঘুরে বেড়ায়। দেশের সকল এলাকায় এদের দেখা মেলে। বিশ্বব্যাপী দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এদের দেখা যায়।

পিঙ্গল বুনো উকরির পেছনের ডানা ২৭ থেকে ৩২ মিলিমিটার লম্বা হয়ে থাকে। এদের উদর ২১ থেকে ২৬ মিলিমিটার লম্বা হয়। চোখ গাঢ় লালচে রঙের। এ প্রজাতির স্ত্রী ও পুরুষ ফড়িংয়ের রঙ প্রায় একই রকম হলেও পুরুষ ফড়িংয়ের তুলনায় ডানা ও দেহের রঙ কিছুটা ফ্যাকাশে।

পিঙ্গল বুনো উকরি ফড়িং মূলত আর্দ্র বনাঞ্চল এলাকায় বসবাস করে। কেবল বর্ষা মৌসুমে এরা বসবাসের এলাকা (বনাঞ্চল) থেকে বাইরে চলে যায়। এরা সারাবছর ওড়াউড়ি করলেও সবচেয়ে বেশি উড়তে দেখা যায় মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এরা বনবাদাড়ের আশপাশের জলপ্রবাহ, নদীতে, জলাভূমিতে প্রজননক্ষেত্র তৈরি করে ডিম পারে ও বংশবিস্তার করে। এরা খাবার হিসেবে উড়ে বেড়ানো ছোট পোকা, মশা, মাছি ও মশার লার্ভা খেয়ে জীবনধারণ করে।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রকৃতিতে বিচরণ করে অসংখ্য ফড়িং, আমরা অনেকেই এদের নাম জানি না। ফড়িংকে ফড়িং বলেই ডাকে সবাই। তবে প্রতিটি ফড়িংয়ের আলাদা আলাদা নাম রয়েছে। বেশিরভাগই ইংরেজি নাম। ফড়িংয়ের বাংলা নাম নেই বললেই চলে।

তিনি আরও বলেন, গঙ্গাফড়িং বা জলফড়িং প্রজাতির ফড়িং এ পিঙ্গল বুনো উকরি। এরা দেখতে খুব সুন্দর। এদের সৌন্দর্যে যে কারো চোখ আটকে যায়। এদের ডানার অবিশ্বাস্য সুন্দর কারুকাজে চোখ ও মন জুড়িয়ে যায়। এদের বেশিরভাগ বন-জঙ্গলে ও ঝোপঝাড়ে উড়তে বা বসে থাকতে দেখা যায়।

ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা কালবেলাকে বলেন, ফড়িং পরিবেশ, প্রকৃতি ও মানুষের বন্ধু। এরা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, বাস্তুতন্ত্র নিয়ন্ত্রণ ও মশা এবং মশার লার্ভা খেয়ে মানুষের উপকার করে থাকে। ছোট এ প্রাণীটি কৃষকদের আবাদ করা ফসলের মধ্য থেকে ক্ষতিকর পোকামাকড় খেয়ে কৃষকদেরও সহযোগিতা করে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে বিচরণরত সুঠাম দেহী ও সুন্দর ফড়িংগুলোর মধ্যে সৌন্দর্যে অন্যতম পিঙ্গল বুনো উকরি। এরা গঙ্গাফড়িং বা জলফড়িং প্রজাতির এক ধরনের ফড়িং। এ দেশে এদের সচরাচর দেখা যায়। এরা জলাশয় সংলগ্ন বনাঞ্চল এলাকায় বসবাস করে। এ সময়টায় এদের বেশি দেখা যায়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সপ্তাহে ২ দিন ছুটিসহ ব্র্যাক এনজিওতে চাকরির সুযোগ

আজ বায়ুদূষণে শীর্ষে লাহোর, ঢাকার অবস্থান কত? 

বিশ্বকাপেও এশিয়া কাপের মতো আচরণ করবে ভারত!

কক্সবাজারে পর্যটকদের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস

ইসরায়েলের সব কূটনীতিককে বহিষ্কারের নির্দেশ কলম্বিয়ার

সবগুলোকে নিয়ে সংসার করব: স্বস্তিকা মুখার্জি

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ আজ

কাঁচপুর সেতুতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২

দেশে কত দামে স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে আজ

বাল্যবিয়ে করতে এসে কারাগারে গেলেন বর

১০

ইসরায়েলের বাধা সত্ত্বেও গাজার দিকে যাচ্ছে ৩০ নৌযান

১১

দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা

১২

প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব

১৩

তারকা ফুটবলারকে ছাড়া বড় চমক রেখে ব্রাজিলের দল ঘোষণা

১৪

ফের মা হতে চলেছেন সোনম কাপুর

১৫

অপরূপ সৌন্দর্যের জলফড়িং পিঙ্গল বুনো উকরি

১৬

রাজধানীর যেসব ঘাটে হবে প্রতিমা বিসর্জন

১৭

বিলিয়নিয়ার ক্লাবে শাহরুখ খান

১৮

পীরগাছায় মানুষের শরীরে অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত : পরিস্থিতি কেমন ও ঝুঁকি কতটা

১৯

ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক ৩৭ দেশের দুই শতাধিক কর্মী

২০
X