ইরানের ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের পর যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং জার্মানি থেকে রাষ্ট্রদূতদের ডেকে পাঠিয়েছে ইরান। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ব সংবাদ সংস্থা তাসনিম নিউজ জানিয়েছে, মূলত উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পরামর্শের জন্য রাষ্ট্রদূতদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
প্রায় এক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো ইরানের ওপর জাতিসংঘের প্রত্যাহারকৃত নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল হয়েছে। আর এই পদক্ষেপের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান ছিল ইউরোপীয় তিন দেশের।
এর আগে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা ৬ মাস স্থগিতের জন্য জোর প্রচেষ্টা চালায় রাশিয়া ও চীন। তাতে তাদের আনা প্রস্তাব ব্যর্থ হওয়ার একদিন পর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের বিল পাস হয়। ১৫ সদস্যের জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়া ও চীনের প্রস্তাব কেবল চারটি দেশের সমর্থন পেয়েছিল, ফলে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা পুনঃপ্রবর্তনের পথ উন্মুক্ত হয়।
উল্লেখ্য, এক মাস আগেই ইরানের ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার জন্য প্রচেষ্টা শুরু করে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি। তাদের অভিযোগ, ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পর্কে যথেষ্ট স্বচ্ছতা দেখায়নি, বিশেষ করে জুন মাসের ১২ দিনের সংঘর্ষে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের বোমাবর্ষণের প্রতিক্রিয়ায় নেওয়া পদক্ষেপগুলো ছিল চুক্তির খেলাপ।
জানা গেছে, পুনর্বহাল হওয়া নিষেধাজ্ঞাগুলো রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাত ১২টা থেকে কার্যকর হবে। এর আওতায় ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক, সামরিক, ব্যাংকিং ও শিপিং শিল্পে বৈশ্বিক সহযোগিতা বন্ধ হয়ে যাবে। বাজারে এর প্রভাব পড়েছে; ইতোমধ্যে ইরানের মুদ্রা রিয়ালের দরপতন শুরু হয়েছে।
আন্তর্জাতিক পরমাণু সংস্থা (আইএইএ) শুক্রবার জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহেই ইরানের কিছু স্থানে পরিদর্শন কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়েছে। তবে এটি স্পষ্ট করা হয়নি যে এই পরিদর্শনে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বোমাবর্ষণের শিকার সাইটগুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল কি না।
নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের পর ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র এই চাপকে ব্যবহার করে ধর্মনিরপেক্ষ সরকারের ওপর আঘাত করতে চাচ্ছে। তারা চায়না কোনো চুক্তি হোক। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে উদ্বেগ সমাধানের উদ্দেশ্য থাকলে আমরা সহজেই তা করতে পারতাম।’ তিনি পুনরায় জোর দিয়ে বলেন, ইরান কখনো পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করবে না।
তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করে আরও বলেন, তারা ইরানের সঙ্গে ইউরোপীয় দেশগুলোকে কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে বাধা দিচ্ছে।
মন্তব্য করুন