কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৮ জুলাই ২০২৪, ১২:৪৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

আবু সাঈদকে গুলি করা নিয়ে মামলায় যা বলেছে পুলিশ

নিহত শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। ছবি : সংগৃহীত
নিহত শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। ছবি : সংগৃহীত

গত ১৬ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ চলাকালে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে নিহত হয় বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। তার পেট ও বুক গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায়। গলা থেকে ঊরু পর্যন্ত ছররা গুলির আঘাত। ফলে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন সাঈদের মরদেহের ময়নাতদন্তকারী ডাক্তার রংপুর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক রাজিবুল ইসলাম।

পুলিশের আগ্নেয়াস্ত্রের সামনে বুক পেতে দিয়ে গুলি খেতে দেখা যায় আবু সাঈদকে। তাকে লক্ষ্য করে পুলিশের গুলিও ছুঁড়তে দেখা যায় একাধিক ভিডিওতে। তবে আবু সাঈদ হত্যা ও সেদিনের ঘটনা নিয়ে করা মামলায় আবু সাঈদকে কারা গুলি করেছে সে বিষয়ে কিছুই উল্লেখ নেই।

আবু সাঈদ নিহত হওয়ার পরদিন ১৭ জুলাই একটি মামলার এফআইআর করেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বিভূতি ভূষণ রায়। তাজহাট থানায় হওয়া ওই মামলায় বলা হয়েছে,‘বিভিন্ন দিক থেকে আন্দোলনকারীদের ছোড়া গোলাগুলি ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের এক পর্যায়ে একজন শিক্ষার্থীকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।’

বিভূতি ভূষণ রায়ের এফআইআরে বলা হয়েছে, ‘বেলা ২টা ১৫ মিনিটের দিকে ছাত্র নামধারী সুবিধাভোগী রাষ্ট্রবিরোধী আন্দোলনরত দুর্বৃত্তগণ বিভিন্ন দিক থেকে বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল ও তাদের নিকটে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র হতে এলোপাতাড়ি গুলি শুরু করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার লক্ষ্যে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশও এপিসি গাড়ির মধ্য হতে কং/ ১১৮৬ সোহেল তার নামীয় সরকারি ইস্যুকৃত শটগান হইতে ১৬৯ রাউন্ড রাবার বুলেট ফায়ার করে। পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।’

আবু সাঈদের মৃত্যু নিয়ে এফআইআরে বলা হয়েছে, ‘বিভিন্ন দিক থেকে আন্দোলনকারীদের ছোড়া গোলাগুলি ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের এক পর্যায়ে একজন শিক্ষার্থীকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। সহপাঠীরা ধরাধরি করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ২-৩ হাজার ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।’

বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে মামলার বাদী বিভূতি ভূষণ রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এজাহার দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তবে মামলার অন্য কোনো বিষয় নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি।

তবে এ বিষয়ে রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এটা চূড়ান্ত কিছু নয়। অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদন ও চিকিৎসকের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন এবং ঘটনার আশপাশের ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে তদন্তে পুরো বিষয়টি উঠে আসবে। ঘটনার দিন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও শটগানের ছররা গুলি ব্যবহার করেছিল পুলিশ। পুলিশের কাউকে গুলি করার অনুমোদন দেওয়া হয়নি বা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয়নি। বিস্তারিত তদন্তে পুলিশের কোনো সদস্যের গুলি করার প্রমাণ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে আবু সাঈদের মরদেহের ময়নাতদন্তকারী ডাক্তার রংপুর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক রাজিবুল ইসলামের সঙ্গে গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি আবু সাঈদের মরদেহের বর্ণনা দেন। তিনি বলেন, ‘আবু সাঈদের বুক ও পেট ছররা গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিল। লুকোচুরির কিছু নেই। অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়। কয়েক দিনের মধ্যে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে।’

আবু সাঈদের বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জের জাফরপাড়া বাবরপুর গ্রামে। তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলনের ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক ছিলেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

ঘটনাপ্রবাহ: কোটা সংস্কার আন্দোলন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

স্কুলে ভর্তিতে ডিজিটাল লটারির তারিখ জানা গেল 

একনজরে বিপিএল নিলামের শীর্ষ ১০ দামি ক্রিকেটার

সুটকেসে মিলল আলোচিত বিউটি ইনফ্লুয়েন্সারের লাশ

এই প্রথম বাংলাদেশের আদালতে ব্রিটিশ এমপির রায় আজ

১৯ মামলার আসামি শীর্ষ সন্ত্রাসী মিল্টন গ্রেপ্তার

দেশে কত দামে স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে আজ

টানা ৭ দিন ধরে তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা

জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ইব্রাহিম আজাদ আর নেই

বিপিএল নিলাম: কোন দল কত টাকা খরচ করল

পয়েন্ট হারাল রিয়াল, জিতল লিভারপুল

১০

স্ত্রীকে নৃশংসভাবে হত্যার পর লাশের সঙ্গে সেলফি

১১

কালবেলার সাংবাদিক শাকিল ফারুকের বাবা মারা গেছেন

১২

ক্ষুব্ধ জয়া বচ্চন

১৩

আজ বিশ্ব এইডস দিবস

১৪

সকালবেলার এই ৯ অভ্যাস আপনার জীবন বদলে দিতে পারে

১৫

পুকুরে মিলল অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর বস্তাবন্দি মরদেহ

১৬

বার্ষিক, নির্বাচনী ও বৃত্তি পরীক্ষা নির্ধারিত সময়ে নেওয়ার নির্দেশ

১৭

শতাব্দীর ইতিহাসের বিরল সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে যেসব এলাকায়

১৮

সাতসকালে ঢাকার বাতাস ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’

১৯

বিজয়ের মাস শুরু

২০
X